নারী শাক্তি
নারী মানে এক অদ্ভুত শক্তি যে আমাদের পৃথিবীর আলো দেখাতে সাহায্য করে। নারী মানে এমন এক শক্তি যে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে অন্যদের এগিয়ে নিয়ে যায়। শুধু তাই নয় নারী হল সেই শক্তি যে জীবনের প্রতি টা সম্পর্ক নিপুণ ও নিঃস্বার্থ ভাব নিয়ে পালন করে, সকল কে দৃঢ় সম্পর্কের বাঁধনে আবদ্ধ করে রাখে। নারী যে রূপেই হোক না কেন মা, কন্যা, স্ত্রী , বান্ধবী , বোন কোন রূপেই তার ভালবাসা, ধৈর্য ও বিশ্বাসের অন্ত্য থাকে না।
পুরাণ মতে এক সময় যখন অন্যায় ও অশুভ শক্তি চারদিকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল তখন নারী রূপী দেবীদুর্গা দুর্গতিনাশিনী রূপে আবির্ভূত হয়ে সমস্ত অশুভ শক্তির নাশ করে শুভ শক্তির সূচনা করেছিল। তখন থেকে আমরা সমস্ত অশুভ শক্তির নাশ করে শুভ শক্তির আগমনের উদ্দেশ্যে দেবী দুর্গার আরাধনা করি। শুধু তাই নয় ধন সম্পদ ও শিক্ষার দেবী রূপে আমরা নারী রূপী লক্ষ্মী ও সরস্বতী দেবী কেই পূজা করে থাকি। এখনও আমাদের সমাজে ৫ থেকে ৭ বছরের কন্যা সন্তানদের মাতৃ জ্ঞানে দুর্গাপূজার অষ্টমীতে দেবীর পাশে বসিয়ে পূজা করা হয়।
এতকিছুর পর ও আমাদের সমাজে আজ নারীদের অবস্থান কোথায় আমাদের চারপাশে ভাল করে লক্ষ্য করলেই বোঝা যায়।
নারীরা যেমন একদিকে ঘর সামলাচ্ছে অন্যদিকে কাঁধে কাঁধ মিলয়ে পরুষদের সাথে কাজ করে চলছে। আবার এই নারীরাই আজ মহাকাশ পারি দিচ্ছে। আবার কিছু নারী,সারা বিশ্ব যখন করোনা নামক মহামারীর ভয়াবহ পরিস্থিতিতে জর্জরিত তখন জীবনের মায়া না করে দিনরাত দেশবাসীর সেবায় কাজ করে চলছে। এই এত কিছুর পর আজও কেন নারীরা অত্যাচারিত হচ্ছে? আজও যখন টিভি ও পত্রিকার খবরে নারী নির্যাতনের ভয়াবহ ছবি দেখতে পাই তখন আর নিজেকে স্থির রাখা যায় না। মন চায় সেই অত্যাচারীদের শাস্তি প্রদান করি। আজও কত নারী (মারূপী) সন্তানকে মানুষ করার জন্য ও সংসার সামলানোর জন্য নিজের স্বপ্ন উৎসর্গ করে দিয়েছে, কত মেয়ে না নিজের পড়াশোনার বলিদান দিয়ে অর্থ উপার্জনের জন্য বাবার পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তবু কেন এই পুরুষ তান্ত্রিক সমাজে মেয়েদের পূর্ণ স্বাধীনতা নেই? কেন আজও একটা ছেলে যেমন নির্দ্বিধায় রাস্তায় চলতে পারে মেয়েরা পারে না? কাজ থেকে ফিরতে দেরি হলে মেয়ের মা বাবার চিন্তার শেষ থাকে না। মা বাবা ছেলে ও মেয়ে দুজনকেই সমান ভাবে দেখার পরও একটা ছেলেকে যেমন ছাড়তে পারে মেয়ের বেলায় কেন বেশি চিন্তা হয়। আজও কেন মেয়েদের যৌতুক বা পণপ্রথা শিকার হতে হয়। আজও কেন সন্তান জন্মানোর আগে ছেলে হবে না মেয়ে হবে প্রশ্ন ওঠে? শ্বশুর বাড়িতে কেন আজও চলে মেয়েদের উপর অত্যাচার?
তবে এই সব কিছুর জন্য কি শুধু পুরুষদের দোষারোপ করে ঘরে বসে থাকলে চলবে? শুধু পুরুষরাই কি তার জন্য দায়ী? আজ যদি আমরা সব নারীরা একজন আরেকজনের পাশে থাকি তবে কি পুরুষদের ক্ষমতা আছে নারীদের উপর অত্যাচার চালাতে পারে। তবে কি শ্বশুর বাড়িতে মেয়েদের উপর অত্যাচার হওয়ার সুযোগ থাকে? নারীরা (মা) যদি তার ছেলেদের মানুষের মতো মানুষ করে তুলে তবে সেই ছেলে কি পারে নারীদের অপমান করতে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ বলে শুধু পুরুষের উপর দোষারোপ করে লাভ নেই। সব পুরুষ ই তো অত্যাচারী হয় না। ঘৃণ্য মানুষিকতার কিছু লোকের জন্য আজ আমাদের সমাজ পিছিয়ে পড়েছে।
তাই এই নারী সমাজকে অত্যাচার ও অপমানের হাত থেকে বাচাতে হলে আমাদের নারীদের এগিয়ে আস্তে হবে । আজ শুধু facebook/whatsapp এ নারী দিবস পালনের নামে কিছু ভাল ভাল ছবি ও লেখা পোস্ট করে তার মধ্যে সিমাবদ্ধ না থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সমাজে কোন নারী যেন অত্যাচারিত না হয় তার খেয়াল রাখতে হবে। মেয়েদের নিজেদের কে মানুসিক ও অর্থনৈতিক দিগ দিয়ে শক্তিশালী করে তুলতে হবে আর তবেই নারী দিবস পালনে সার্থকতা আসবে। ভবিষ্যতেও আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের মেয়েরা নির্দ্বিধায় ও নির্ভয়ে এগিয়ে যেতে পারবে। অবচেতন মনে শুধু নিজেদের বিলিয়ে না দিয়ে নিজের শক্তিকে প্রমাণ করে দিয়ে পৃথিবীকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
5 Comments
Please comment
ReplyDeleteখুব ভালো লাগলো
ReplyDeleteDarunnn
ReplyDeleteFabulous article
ReplyDeleteNice article 👌👍
ReplyDeleteThanks for comments.