কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা / Kojagari Lakshmi Puja
(English and Bengali both languages are available)
দশমীতে মা দুর্গা কৈলাসে ফিরে গেছেন তাই আকাশে বাতাসে আজ বিষাদের সুর। চারিদিকে কিছুটা হলেও মন খারাপের পরিবেশ। কিন্তু হিন্দুদের তো বারো মাসে তেরো পার্বণ একটা শেষ হতে না হতেই আর একটা পার্বণ শুরু। একইভাবে পরপর আসে বিশ্বকর্মা পূজা, মহালয়া, দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজার শেষ হতে না হতেই এসে যায় কোজাগরী লক্ষী পূজা। তাই বিষাদ ভরা মন নিয়ে মা দুর্গা কে বিদায় জানালেও কয়েকদিনের মধ্যেই মা লক্ষ্মী সেই বিষাদ দূর করে মনে প্রাণে আনন্দের দোলা লাগিয়ে বাঙালির ঘরে ঘরে অধিষ্ঠিত হন। ঘরে ঘরে শুরু হয় দেবী লক্ষ্মীর আরাধনার তোড়জোড়।
শাস্ত্র পুরাণে লক্ষ্মীদেবীকে আদিশক্তি ভগবতী দেবী রূপে মানা হয়েছে। লক্ষ্মী ধন-দৌলত, অর্থের দেবী। তাঁর কৃপাতেই মানুষ ধন-দৌলত-সুখ-স্বাচ্ছন্দ-যশ-মান প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তাঁর দয়া মমতা মহাসাগরের মতো। তিনি কখনও কারও প্রতি কঠোর হোন না। যে কোনও মানুষ যদি ভক্তি ভরে ব্যাকুলভাবে তাঁর আরাধনা করেন তাহলে দুর্ভাগ্য দূর হয়ে, সৌভাগ্য আসে এবং ধনলাভ ঘটে। তাই হিন্দু গৃহস্থরা সারাবছর ধরেই প্রতি বৃহস্পতি বার মা লক্ষীর পূজা করে থাকেন। কেউ কেউ আবার কালীপুজোর দিনেও লক্ষ্মী পূজা করে থাকেন। এছাড়াও মা লক্ষ্মী সম্পদদায়িনীর বলে ভাদ্র সংক্রান্তি, পৌষ সংক্রান্তি ও চৈত্র সংক্রান্তিতে এবং আশ্বিন শেষ পূর্ণিমাতেও পূজিত হন। তবে আশ্বিন মাসের শেষ পূর্ণিমায় যে লক্ষ্মী পূজা হয় তা হল কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা।
লক্ষ্মী পুজাকে কেন কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা বলা হয়?
কোজাগরী শব্দটির উৎপত্তি ‘কো জাগতী’ থেকে। অর্থাৎ ‘কে জেগে আছো?’ পূরাণে কথিত আছে, কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার দিন মা মর্ত্যে এসে সকলের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেখেন কে জেগে আছে এবং কে কে তাকে অভ্যর্থনা করে পূজা করছে এবং প্রদীপ জ্বালাচ্ছে । সেই সব ভক্তদের ই তিনি কৃপা করেন। কিন্তু যে বাড়ির দরজা বন্ধ থাকে, সেই বাড়িতে ধন-দৌলতের দেবী প্রবেশ করেন না। মুখ ফিরিয়ে চলে যান। সেজন্য নাকি রাত জেগে মা লক্ষ্মীর পূজা হয়। আশ্বিন মাসের শেষ পূর্ণিমা তিথিতে সেই পূজা হওয়ায়, তাকে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা বলা হয়। সেই থেকেই লক্ষ্মী পূজার রাতে জেগে থাকার রীতি প্রচলিত আছে। সারারাত জেগে লক্ষ্মী আরাধনাই এই পূজার বিশেষত্ব।
নানান রূপে লক্ষ্মী
লক্ষ্মীর মূর্তি পূজা ছাড়াও নানান ভাবে লক্ষ্মীদেবীকে কল্পনা করে এদিন তাঁকে পূজা করা হয়। যেমন- আড়ি লক্ষ্মী। এ ক্ষেত্রে ধান ভর্তি ঝুড়ির ওপর কাঠের লম্বা দুটি সিঁদূর কৌটো লালচেলিতে মুড়ে লক্ষ্মীর রূপ দেওয়া হয়। আবার কলার পেটোর তৈরি নৌকা (সপ্ততরী)লক্ষ্মী আরাধনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাণিজ্যিক নৌকার প্রতীক এই সপ্ততরী। অনেকেই পূজার সময় এই সপ্ততরীতে টাকা, শস্য, হরিতকি, কড়ি, হলুদ রাখেন। কেউ কেউ আবার সরায় পটচিত্রের সাহায্যেও লক্ষ্মীপূজা করেন। যেমন- ঢাকাই সরা, ফরিদপুরি সরা, সুরেশ্বরী সরা ও শান্তিপুরি সরা। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় লক্ষ্মীসরা আঁকা হয়। অঞ্চল ভেদে এই সরায় তিন, পাঁচ, সাতটি দেব দেবীর ছবি আঁকা হয়। যেমন লক্ষ্মী, জয়া ও বিজয়া, রাধাকৃষ্ণ, সপরিবারে দুর্গা ইত্যাদি। সুরেশ্বরী সরায় মহিষাসুরমর্দিনী আঁকা থাকেন আর এই সরার নীচের দিকে থাকেন সবাহন লক্ষ্মী।
English
Goddess Durga has returned to Kailash on Dashmi, so there is a melody of sadness in our mind. But for the Hindus, the thirteenth festival in twelve months comes one after another. In the same way Bishwakarma Puja, Mahalaya, Durga Puja come one after another. Kojagari Lakshmi Puja comes right after Durga Puja. The worship of Goddess Lakshmi is performed everywhere.
In Shastra Purana, Lakshmi Devi is considered as Adishakti Bhagwati Devi. Lakshmi is the goddess of wealth. It is by her grace that man gains wealth, happiness, ease, and fame. Her kindness is like an ocean of compassion. She should never be harsh to anyone. If any person worships her with devotion and longing, then misfortune is removed, good fortune comes and wealth comes. That is why Hindu householders worship Mother Lakshmi every Thursday throughout the year. Some people also worship Lakshmi on the day of Kali puja. Mother Lakshmi is also worshiped in Bhadra Sankranti, Poush Sankranti and Chaitra Sankranti and Ashwin on the last full moon. However, the Lakshmi Puja performed on the last full moon of the month of Ashwin is the Kojagari Lakshmi Puja.
Why is Lakshmi Puja called Kojagari Lakshmi Puja?
The word Kojagari originates from 'Ko Jagati'. In other words, it is said in the Purana ‘Who are you awake? She has mercy on all those devotees. But the goddess of wealth does not enter the house where the door is closed. Turn your face away. That is why mother Lakshmi is worshiped at night. Since that puja is performed on the last full moon day of the month of Ashwin, it is called Kojagari Lakshmi Pujo. Since then, Lakshmi Pujo has had a tradition of staying awake at night. The specialty of this puja is to worship Lakshmi all night long.
Lakshmi in various forms
Apart from worshiping the idol of Lakshmi, she is worshiped on this day by imagining Goddess Lakshmi in various ways. For example- Aari Lakshmi. In this case, two long wooden vermilion boxes are wrapped in red cloth on a basket filled with paddy and given in the form of Lakshmi. Again, the boat (saptatari) made of banana stem is one of the most important parts of Lakshmi worship. This sailboat is the symbol of the commercial boat. Many people keep money, grains, crops, buds and turmeric in this saptatari during puja. Some of them also worship Lakshmi with the help of Saraya Patachitra. Such as- Dhakai Sara, Faridpuri Sara, Sureshwari Sara and Shantipuri Sara. Lakshmi is painted in different districts of West Bengal. Depending on the region, three, five, seven gods and goddesses are painted in this inn. Such as Lakshmi, Jaya and Vijaya, Radhakrishna, Durga with family, etc. Mahishasurmardini is painted in Sureshwari Sarai and Sabahan Lakshmi is at the bottom of this Sarai.
0 Comments
Thanks for comments.